সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:০০ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম:
মুকসুদপুরে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকার প্রার্থী হতে চান যারা

মুকসুদপুরে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকার প্রার্থী হতে চান যারা

তারিকুল ইসলামঃ
অসমর্থীত প্রাপ্ত সুত্রে জানা যায় এবছর এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচন শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন তাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে না পারলে রমজানের পরে অর্থাৎ জুন মাসের প্রথমার্থে ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে তা নিশ্চিত। আসন্ন সে নির্বাচনকে সামনে রেখে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীদের কর্মতৎপরতা ভোটারদের দৃষ্টি আকৃষ্ট করতে সমর্থ হয়েছে। যেহেতু মুকসুদপুর উপজেলায় ৯৫% এর উপরে আওয়ামী লীগের সমর্থক সেহেতু ভোটের মাঠে যারা রয়েছেন তাদের অধিকাংশই নৌকার প্রার্থী হতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। সে আলোকে “সাপ্তাহিক বাংলার নয়ন” ধারাবাহিক সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে।

২নং পশারগাতী ইউনিয়নঃ
পশারগাতী ইউনিয়নের মোট ভোটার ১০,৭০৫জন। এদের মধ্যে পুরুষ ৫৪০৮ এবং নারী ভোট ৫২৯৭জন। দলীয়ভাবে যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী বলে শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন পশারগাতী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আঃ রহমান মীর। ব্যাক্তিগতভাবে তিনি একজন সচ্ছল ব্যক্তি এবং সরল মনের মানুষ। দলের জন্য বিপুল অর্থ খরচ করতে তিনি কুন্ঠা করেন না। বিগত নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেলেও আসন্ন নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীক পেয়ে নির্বাচন করবেন এমন আশা প্রকাশ করেন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী মজিবর রহমান দলীয় মনোনয়ন পাবেন
বলে আলাপকালে আশা প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, বিগত দিনে তিনি চেয়ারম্যান থাকার সুবাদে ইউনিয়নের সকল ভোটারদের সঙ্গে তার আন্তরিক সম্পর্ক গড়ে উঠে ছিল যা এখনও তিনি রক্ষা করে চলেছেন। নৌকা প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করতে পারলে অন্যদের চেয়ে তার জয় হবে খুবই সহজ। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সম্পাদক সাহিদুর রহমান সালমান মিয়া দলের মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন।
আলাপকালে তিনি জানান, তার বড় ভাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। তার বাবা ওবায়দুর রহমান টুকু মিয়া একাধিকবার পশারগাতী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন
এবং দাদার ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সার্বিক বিবেচনা করে দল তাকে মনোনয়ন দিবে বলে তিনি দৃঢ় আশা প্রকাশ করেণ ইউনিয়নে অপর কোন প্রার্থীর নাম এখনও শোনা যায়নি।

৩নং গোবিন্দপুর ইউনিয়নঃ
উপজেলার সবচেয়ে বড় দুটি ইউনিয়নের একটি গোবিন্দপুর ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নের ভোটার সংখ্যা ২০,৭৩৮ জন। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান ওবায়দুল ইসলাম দল থেকে মনোনয়ন চাইবেন বলে জানিয়েছেন। ইউনিয়ন আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন মিয়া বিগত নির্বাচনে দলের মনোনয়ন না পেলেও আগামী নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়ন পাবেন বলে আস্থা প্রকাশ করেন।
স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে এলাকায় গনসংযোগ করছেন এনামুল হোসেন মোল্যা। তিনি জানান, তার মরহুম বাবা নওশের আলী মোল্যা এ ইউনিয়নে তিনবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। পারিবারিকভাবে তার পরিবারের এলাকায় যেমন পরিচিতি রয়েছে তেমনি সুনামও রয়েছে। সুষ্ঠু ভোট হলে বিপুল ভোটের ব্যাবধানে তিনি নির্বাচিত হবেন এমন আশা প্রকাশ করেন এনামুল মোল্যা।

৪নং খান্দারপাড়া ইউনিয়নঃ
এ ইউনিয়নের মোট ভোটার ৯,৭৩৪ জন। পুরুষ ৪৮৮৭ এবং মহিলা ভোটার ৪৮৪৭ জন। উপজেলা আওয়ামীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাব্বির খান একমাত্র দলীয় প্রার্থী। সংসদ সদস্য মু. ফারুক খানের ভাই বিধায় তার বিরুদ্ধে অন্য কোন দলীয় প্রার্থী আসবেনা বলে অনেকের ধারনা। ইউনিয়নে তার নিজস্ব এলাকা ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডে এক নির্বাচনী মতবিনিময় সভায় এলাকার জনগন তাকে সমর্থন দিয়েছে বলে জানা যায়। এক প্রশ্নের উত্তরে সাব্বির খান জানান, নির্বাচনে মেম্বার পদ নিয়ে যাতে কোন দাঙ্গা হাঙ্গামা না হয় সেজন্য এ তিন ওয়ার্ডের জনগন পারভেজ ভুইয়া, উজ্জল মুন্সী ও তারিকুলকে নিজ নিজ ওয়ার্ড মেম্বার হিসাবে মনোনীত করেছে এবং মহিলা আসনে মর্জিনা বেগমকে নির্বাচিত করেছে। অন্য কেউ এখানে নির্বাচনে আসবেনা বলে তিনি জানান। আরো দুটি ওয়ার্ডে এমন নির্বাচন হতে পারে বলে তিনি জানান। এ ইউনিয়নে খান্দারপাড়া গ্রামের সাহিদুল ইসলাম মুন্সী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করবেন বলে তার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। উল্লেখ্য,সাহিদুল ইসলাম মুন্সী এর পূর্বে এ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং তার বড় ভাই আঃ হান্নান মুন্সীও চেয়ারম্যান ছিলেন। খান্দারপাড়া ইউনিয়নে মুন্সী পরিবারের ঐতিহ্য দীর্ঘ দিনের।

৫ নং বহুগ্রাম ইউনিয়নঃ
১৭টি গ্রাম নিয়ে গঠিত ৫ নং বহুগ্রাম ইউনিয়ন। মোট ভোটার ১১,০৩৩। এদের মধ্যে পুরুষ ৫৫৬৪ জন এবং মহিলা ৫৪৬৮জন। নৌকার প্রার্থী হতে প্রানপণ চেষ্টা ও দৌড়ঝাপ করছেন যারা তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন মুকসুদপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার সম্পাদক ও বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য, সাংবাদিক, মুকসুদপুর প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক কাজী মোঃ ওহিদুল ইসলাম। যিনি বিগত নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়েছিলেন। তার সঙ্গে আলাপকালে তিনি জানান, ছাত্র জীবন থেকে বর্তমান পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে প্রথম সারির এবং উপজেলাা সহ ইউনিয়নের প্রতিটি সামাজিক কর্মকান্ডে অগ্রনী ভুমিকা রেখে আসছেন। দলের প্রয়োজনে বিপুল অঙ্কের অর্থ ব্যয় করতে তিনি কার্পন্য করেননি। তার বিগত দিনের কর্মকান্ড বিবেচনা করে আগামী নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাবেন এমন প্রত্যাশা করেন কাজী ওহিদুল ইসলাম।
উপজেলা আওয়ামী লীগের অপর সদস্য মোঃ ফরহাদ হোসেন মুন্সী টুলু দলের মনোনয়ন পেতে দলীয় নেতাদের সঙ্গে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রেখে চলেছেন বলে জানা গেছে। বহুগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক নারায়ন চন্দ্র দাস এবছরও দল থেকে মনোনয়ন চাইবেন বলে একাধিক সূত্রে জানাগেছে। নবাগত হিসেবে এবারের নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে চেষ্টা চালাচ্ছেন মোঃ মামুন শেখ ও মোঃ মিজানুর রহমান। দলের বাইরেও যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন সাবেক চেয়ারম্যান রনজিত কুমার বিশ্বাস ও মোঃ দেলোয়ার হোসেন দুলাল মিয়া। উল্লেখিত সকলেই ইতিমধ্যে সারা ইউনিয়নে নিরলসভাবে গনসংযোগ করছেন এবং কেউ কেউ স্বল্প পরিসরে উঠোন বৈঠক করছেন মর্মে এলাবাসী সূত্রে জানাগেছে।
বিগত নির্বাচনে দলের উল্লেখযোগ্য কোন পদধারী না হয়েও মোঃ সোহেল সেখ আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বাগিয়ে নিতে সমর্থ হয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। আসন্ন নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়ন চাইবেন কিনা বা নির্বাচনে আসবেন কিনা তা এ রিপোর্ট লেখা সময় পর্যন্ত জানা যায়নি। অনেকের ধারনা এ নির্বাচনে সোহেল সেখ নাও আসতে পারেন। তবে নির্বাচনী ঘোরপ্যাচ দেখতে শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা না করে এখনই নিশ্চিত হওয়া সমিচীন হবেনা। (চলমান,পরের সংখ্যায় দেখুন)।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..




© All rights reserved 2018 Banglarnayan
Design & Developed BY ThemesBazar.Com